মুখের দাগ-ছোপ তাড়ানোর সহজ ৫ টি ঘরোয়া উপায়


মোটামুটি সব মহিলারই মুখে, বিশেষ করে দুই গালে, কপালে, গলায়, পিঠে একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর দাগ-ছোপ পড়ে যায়। তবে যারা নিয়ম মেনে ত্বকের যত্ন নেন, রোদের হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করেন, তারা দীর্ঘদিন এই ধরনের দাগের হাত থেকে নিজেদেরকে বাঁচাতে সক্ষম হয়ে থাকেন। এজন্য ত্বকের যত্নআত্তির ব্যাপারটিতে কোনো রকম সমঝোতা না করাই ভালো। নিয়মিত ক্লেনজ়িং, টোনিং, ময়েশ্চরাইজ়িংয়ের রুটিন মেনে চলতে হবে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে নিশ্চিত করতে হবে যে, ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকছে। মনে রাখতে হবে যে, আমরা বর্তমানে দিনের অনেকটা সময় এবং রাতের বেলাতেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে অবস্থান করি। এজন্য যতটা চিন্তা করা যায়, আসলে আপনার ত্বকের তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণ আর্দ্রতা প্রয়োজন হয়। অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, সুইট আমন্ড অয়েলও ময়েশ্চরাইজ়ার হিসেবে খুবই ভালো কাজ করে থাকে। আপনার ত্বকের জন্য কোনটা সবচেয়ে ভালো কাজ করথ, সেটা কেবল আপনাকে বুঝে নিতে হবে।


যে যে কারণে ত্বকে কালো ছোপ পড়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়:


✏️রোদ: ত্বকের নিদাগ উজ্জ্বলতার প্রধান শত্রু হলো সূর্যের চড়া আলো। রোদে বের হবার পূর্বে অতি অবশ্যই মুখসহ শরীরের সব খোলা অংশে সানস্ক্রিনের প্রলেপ লাগাতে হবে। যখন সাঁতার কাটবেন, তখন ব্যবহার করুন ওয়াটারপ্রুফ সানস্ক্রিন। সানস্ক্রিনের আস্তরণ যদি না থাকে, তবে আপনার ত্বক নিজেই নিজেকে সূর্যের প্রখর আলো হতে সুরক্ষিত রাখার জন্য বেশি বেশি করে মেলানিন তৈরি করবে। এতে গাঢ় স্পটের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।


✏️ব্রণ বা চোট-আঘাতের দাগ: ব্রণ বা ফোড়া হলে কখনোই তা খুঁটবেন না এবং সে স্থানে বারবার হাত লাগাবেন না। এর ফলে দাগ চট করে মিলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।


✏️হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: হরমোনের অতিরিক্ত বেশি বা কম ক্ষরণের কারণে ত্বকে গাঢ় রঙের দাগ-ছোপ পড়তে পারে। প্রেগন্যান্সি বা মেনোপজের ফলে হরমোনের স্তরে ভারসাম্যের অভাব দেখা দিয়ে থাকে। এর কারণে মেলানিনের উৎপাদনেও সাম্য থাকে না। এতে আপনার মুখে, কাঁধে, গলায় ছোপ-ছোপ স্পট দেখা দিতে পারে।

✏️ত্বককে রোমহীন রাখার জন্য অনন্ত প্রচেষ্টা: বহু মহিলাই আছেন, যারা তাদের ত্বকের বাড়তি রোমের আস্তরণকে সরিয়ে ফেলতে চান। এই জন্য তারা রোম তোলার ক্রিম, টুইজার, ওয়্যাক্স ইত্যাদি নানা ধরনের পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে থাকে। কিন্তু নিরন্তর এই প্রচেষ্টা চালাতে গিয়ে ত্বকের স্পর্শকাতরতা বৃদ্ধি পায়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়ে যায় দাগ-ছোপের আশঙ্কাও।



যে যে ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করার ফলে এই দাগ মিলিয়ে যেতে পারে:


✏️লেবুর রস আর পানির মিশ্রণ: শুধুমাত্র চোখের চারপাশটাকে বাদ দিয়ে মুখে বা গলার অন্যত্র স্থানে প্রতি একদিন অন্তর লেবুর রস আর পানির মিশ্রণটা লাগিয়ে দেখতে পারেন কয়েকদিন। আপনি চালাতে পারেন লেবুর রস আর মধুর মিশ্রণও। প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করে থাকে লেবু । এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি ক্রমশ গাঢ় কালো ছোপ হালকা করে ফেলতে পারে। আপনার ফেস মাস্কেও লেবুর রস ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে তাজা রসই ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। বোতলবন্দি লেবুর নির্যাসে থাকে প্রিজারভেটিভ। এ থেকে বৃদ্ধি পেতে পারে ত্বকের প্রদাহ।


✏️আলুর রস: প্রথমে আলু খুবই ভালো করে ধুতে হবে। এরপর তা ছেঁচে রস বের করে নিন। এরপর সরাসরি সেই রস লাগিয়ে ফেলুন দাগ-ছোপের উপর। ১০ মিনিট মতো অপেক্ষা করার পর তা ধুয়ে ফেলতে পারেন। এছাড়াও আলুর রস, মধু আর লেবুর রস দিয়েও ফেস প্যাক বানানো যেতে পারে।


✏️অ্যালো ভেরা জেল: অ্যালো ভেরা জেলও দাগ-ছোপকে তাড়াতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। প্রথমে আপনি অ্যালো ভেরা পাতা থেকে জেল বের করে নিন। এরপর তা সরাসরি আপনার ত্বকে লাগাতে পারেন। অ্যালো ভেরা জেল, চিনি আর লেবুর রসের মিশ্রণ তৈরি করার পর তা লাগিয়ে নিতে পারেন আপনার ত্বকে।


✏️আমন্ডের তেল: রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ময়েশ্চরাইজারের পরিবর্তে আপনি কয়েক ফোঁটা সুইট আমন্ড অয়েল ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এতে ভালো ফল পাবেন।


✏️ভিটামিন ই তেল: যদি আপনার ভিটামিন ই তেলে কোনও অ্যালার্জি না থাকে, তাহলে দাগ-ছোপে আপনি সরাসরি তা ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ক্রয় করে এনে তা থেকে তেল বের করে নিয়ার পর সেই তেলও সরাসরি দাগের উপর লাগানো সম্ভব। কিন্তু যাদের ব্রণর ধাত আছে,  তারা এক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় রাখুন আমন্ড, শুকনো অ্যাপ্রিকট, সানফ্লাওয়ার সিডস ইত্যাদি।

Post a Comment

0 Comments