আপনি যদি মাথায় ঝলমলে উজ্জ্বল চুল পেতে চান, তবে তা পাওয়ার অন্যতম প্রধান পথ হলো ভালো তেল দ্বারা চুল আর মাথায় ভালো করে ম্যাসেজ করা। নিয়মিত তেল দ্বারা চুলে আর স্ক্যাল্পে ম্যাসেজ করতে পারলে বেশ কিছু প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উপকারিতা পাওয়া যায়। যেমন: ডিপ কন্ডিশনিং, শরীর-মনের শিথিলতা, উন্নত রক্ত সংবহন, চাপমুক্তির মতো আরও অনেক উপকারিতা। অনেকেই আছেন, যারা সঠিক তেল বেছে নিতে পারেন না। বিভিন্ন মানুষের নিকট থেকে পরামর্শ গ্রহন করে থাকেন। আজ আমি আপনাদের এই সমস্যার অনেক বড় একটা সমাধান নিয়ে চলে এসেছি। আজ আপনাদের জানাব যে কোন তেলের কি উপকারিতা। আর এটি জানতে পারলে, আপনি সহজেই নির্বাচন করতে পারবেন আপনার পছন্দের তেল। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. নারকেল তেল: নারকেল তেল ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক প্রতিরোধী হয়ে থাকে এবং স্ক্যাল্প স্নিগ্ধ রাখতেও সহায়তা করে থাকে। গবেষণায় থেকে দেখা গেছে যে, ভার্জিন কোকোনাট তেল হতে কোনও রকম প্রদাহ সৃষ্টি হয় না। ফলে চুল ওঠার সমস্যা যদি থাকে, তবে এই তেলই সবচেয়ে ভালো। ময়শ্চারাইজার হিসেবও খুব ভালো কাজ করে থাকে এবং চুলের উজ্জ্বলতাকে ধরে রাখতে সহায়তা করে থাকে নারকেল তেল।
২. আমন্ড অয়েল: এই তেলটি হালকা ও একেবারেই চটচটে প্রকৃতির নয়৷ ভিটামিন ই-র গুণে পরিপূর্ণ এই তেলটি চুলে পুষ্টি জোগায়, চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং চুলকে মজবুত ও ঝলমলে করে তুলতেও এটি সহায়তা করে থাকে৷ আমন্ড অয়েল খুসকি কমাতে সহায়তা করে এবং স্ক্যাল্পেও এটি পুষ্টি জোগায়।
৩. অলিভ অয়েল: নন-হিটেড কনজাম্পশনের জন্য এবং ত্বকে লাগানোর জন্য অলিভ অয়েল অত্যন্ত ভালো৷ এই তেলটিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়, স্ক্যাল্পকে পুনরুজ্জীবিত করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে৷ এই তেলে রয়েছে পর্যাপ্ত ময়শ্চারাইজার এবং এটিতে অধিক ভিটামিন ই- রয়েছে। যা চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়৷ এই হেয়ার অয়েলটিতে ওলেইক অ্যাসিড রয়েছে যা চুলের গভীরে প্রবেশ করতে পারে খুব সহজেই এবং এটি আদ্রতা ধরে রাখে৷
৪. তিল তেল: অনেক আয়ুর্বেদিক ওষুধে বেস অয়েল হিসেবে ব্যবহৃত এই তিল তেল চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে এবং স্ক্যাল্পের সংক্রমণকে কমিয়ে আনে। স্ক্যাল্পে পুষ্টির জোগান দিতে, চুল কন্ডিশনিং করতে এবং খুসকি কমানোর জন্য হট অয়েল ট্রিটমেন্টে হামেশাই তিল তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
৫. ক্যাস্টর অয়েল: কসমেটিক অয়েল হিসেবেও খুবই জনপ্রিয় এই তেল চুলের জন্য দারুণ কাজ করে ৷ শরীরে সাধারণত প্রস্টাগ্ল্যান্ডিন বা পিজিডি২ হরমোনের আধিক্য থাকলে অত্যধিক চুল ওঠার শিকার হতে হয়৷ গবেষণা থেকে জানা গেছে, ক্যাস্টর অয়েলে উপস্থিত একটি উপাদান এর সাহায্যে এই হরমোনটিকে দমন করা যায়। যার ফলে চুল ওঠা বন্ধ হয়ে যায় এবং চুলের বৃদ্ধি ভালো হতে আরম্ভ করে।
৬. জোজোবা অয়েল: জোজোবা অয়েল ব্যবহৃত হয় নানান ধরনের বিউটি ট্রিটমেন্ট আর কসমেটিকসে। মাথার ত্বকে ও চুলের ফলিকলের গোড়ায় তেলময়লা জমে গেলে তা চুলের বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। জোজোবা অয়েল সেই জমে যাওয়া ময়লাকে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে সক্ষম। জোজোবা অয়েল চুলে আর্দ্রতা জোগান দিয়ে থাকে এবং চুলকে বাইরের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।সবচেয়ে ভালো একটি ব্যাপার হল, জোজোবা অয়েলটি হাইপোঅ্যালার্জেনিক ও কোনওভাবেই চুল বা স্ক্যাল্পের কোনও প্রকার ক্ষতি করে না।
৭. আর্গান অয়েল: আর্গান গাছের শাঁস হতে আর্গান অয়েল পাওয়া যায়। এই তেলটি প্রচুর পরিমাণে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, টোকোফেরল এবং পলিফেনল চুলকে বাঁচাতে সক্ষম হয় পরিবেশের ক্ষতির হাত থেকে। এই উপকারী তেলটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়ও এই তেলটি দ্রুত নতুন ত্বকের জন্ম দিতেও সহায়তা করে থাকে।
এবার আপনি বেছে নিন চুলে ম্যাসেজ করার জন্য আপনার পছন্দ মতো তেল।
0 Comments