ফেসবুকে আপনারা অনেকেই ভিডিও দেখেন।আমিও সময় পেলে ফেসবুকে ভিডিও দেখি।কিন্তু হঠাৎ করে ফেসবুকের নিউজফীডে বন্ধুদের দেখছি এক যুবকের কিছু ভিডিও শেয়ার করতে।একজন শেয়ার করলে হয়ত তেমন ভাবে লক্ষ্য করতাম না।তবে অনেকেই দেখছি তার ভিডিও শেয়ার করছে।আবার অনেকে তার ছবিটিকে নিজের প্রোফাইল ছবি হিসেবে দিয়েছে।আমি তো অবাক!আমার মনে প্রশ্ন জাগল, কে এই ব্যক্তি?কেন সবাই তার ভিডিও শেয়ার করছে?
এই সকল প্রশ্ন যখন আমার মনে,ঠিক তখনই আমি তার একটা ভিডিও প্লে করি।আর আমি দেখি, সম্ভবত ২৪-২৫ বছর বয়সী কালো মতন একজন বিদেশি যুবক মাহফুজুর রহমানের একটা গানের লাইন রিডিং এর মতো করে হাসিমুখে বলছেন,"ঘুমাতে পারি না সারারাত ধরে,বুকের ভেতরটা হাহাকার করে!"তিনি একজন বিদেশি হওয়ায়,আমাদের মতো ভালোভাবে বাংলা বলতে না পারলেও ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলছে,যা শুনতে ভালোই লাগছিল।
একটা ভিডিও দেখার পর আমি তার আরও কয়েকটি ভিডিও দেখি এবং সেগুলোতে দেখি তিনি হাসি মুখে একটা ডায়ালগ বলছেন,"আহো ভাতিজা আহো"।এছাড়াও দেখি তিনি বলছেন,"মদ খাবি মানুষ হবি।"নোয়াখালীকে "নোখালী" উচ্চারণ করে,তিনি বলছেন,"নোখালী বিভাগ চাই!নোখালী বিভাগ চাই!নোখালী বিভাগ চাই!"আর একটি ভিডিওতে দেখি,"আমার সোনার বাংলা,আমি তোমায় ভালোবাসি" বলে তিনি আমাদের জাতীয় সংগীতও গাইছেন।
একজন বিদেশি ছেলের এমন সব ভিডিও দেখে তার সম্পর্কে খুবই জানতে ইচ্ছা হলো।তার সম্পর্কে আমি কিছু তথ্য জানতে পারি । এখন আমি আপনাদেরকে ঐ বিদেশি ছেলেটি সম্পর্কে কিছু বলব।
ছেলেটি সম্পর্কে কিছু তথ্য:
আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এই তরুণের নাম Borzah Yankey (বাংলা উচ্চারণ: বোরজাহ্ ইয়াঙ্কি)। তার বাবা-মা ঘানা থেকে কানাডায় এসেছিলেন , তবে তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কানাডার উইনিপেগ- এ। বোরজাহ্ ইয়াঙ্কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আর টিকটকে সক্রিয়। এই দুটো প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে তার প্রায় সাড়ে আট লাখ ফলোয়ার রয়েছে।
কানাডার কেলভিন হাইস্কুল থেকে ডিপ্লোমা পাশ করে এখন তিনি টরেন্টোর কিংসওয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন।বোরজাহ্ বাংলা কোথা থেকে শিখেছে- জানেন? কোন ইউটিউব চ্যানেল দেখে নয়, ডিপ্লোমা কোর্স করার সময় একজন প্রবাসী বাংলাদেশী তার বন্ধু হয়, তার কাছ থেকে তিনি বাংলা কথা শুনে শুনে শিখেছেন।
সবাইকে হাসি-আনন্দে মাতিয়ে রাখা বোরজাহ্ ইয়াঙ্কি স্কুল লেভেলে অসাধারণ অ্যাথলেট ছিলেন।তিনি কানাডিয়ান জুনিয়র সামার মিটে জ্যাভেলিন থ্রো- বিভাগে রেকর্ডও করেছিলেন। একসময় তিনি পার্ট টাইম জব হিসেবে ন্যানি/বেবিসিটারের কাজ করতেন।তিনি অলিম্পিকে খেলার স্বপ্ন দেখেন।এজন্য তিনি সপ্তাহে পাঁচদিন প্র্যাকটিস করেন। বোরজাহ্ ইয়াঙ্কি নিশ্চিত যে, তিনি একদিন কানাডার পতাকা গায়ে জড়িয়ে অলিম্পিকে নামার সুযোগ পাবেন।পাশাপাশি আরেকটা স্বপ্ন আছে বোরজাহ্ ইয়াঙ্কির।তার ফিল্ম এবং ভিডিও মেকিং নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে।
বোরজাহ্ ইয়াঙ্কি তার অঙ্গভঙ্গি ও ভাঙা ভাঙা বাংলা ভাষায় কথা বলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক মানুষকেই আনন্দিত করছেন।আপনারা যদি তার ভিডিও দেখতে চান,তবে ফেসবুকে Borzah Yankey লিখে অনুসন্ধান করুন।
0 Comments