যেসব অবহেলার কারণে নষ্ট হচ্ছে চোখ



শরীরের মূল্যবান অঙ্গ হলো চোখ। এই চোখই ঘুম ভাঙ্গার পর থেকে আবার ঘুমাতে যাওয়ার পূ্র্ব পর্যন্ত অবিরত থাকে। চোখের মাধ্যমেই জীবন গড়ে উঠে এবং পৌঁছানো যায় সমাজের উচ্চতর স্থানে। কিন্তু এই অঙ্গটি বেশিরভাগ সময়ই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত।


কিছু চেনাজানা ভুলের জন্যই  নিজের অজান্তেই ক্ষতি হয়ে থাকে চোখের। পানির ঝাপটা আমরা তখনই দিই, যখন ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসে। অনেকেই আছেন, যারা দৃষ্টি ঝাপসা না হওয়া পর্যন্ত চোখ নিয়ে মাথা ঘামান না। এর ফলে বাড়তে থাকে চোখের সমস্যা। 


এবার দেখে নেওয়া যাক, কোন ভুলগুলো আমরা কিভাবে এড়িয়ে চলতে পারি-


• চলন্ত ট্রেন, বাস বা দূরন্ত গতির গাড়িতে বসে বই পড়ার ফলে চোখে স্ট্রেন পড়ে থাকে। ছোট ছোট কম্পমান অক্ষর পড়ার সময় চোখে চাপ পড়ে বেশি, এজন্য এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।


• অন্ধকারে টিভি স্ক্রিন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে চোখ রাখার ফলে সমস্ত কনসেন্ট্রেশন মনিটরে গিয়ে পড়ে, যা চোখের পক্ষে অস্বস্তিদায়ক হয়ে থাকে। ব্লু রে’র প্রভাবও অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে একটানা দেখবেন না। ঘরের আলো জ্বালিয়ে দেখলেই ভালো হবে।


• যাদের কম্পিউটারের সামনে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করতে হয়, তাদের কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম খুবই কমন। এর ফলে চোখের ড্রাইনেসও দেখা যায়। তাই কিছু সময় অন্তর কম্পিউটার বা এ জাতীয় অন্য যন্ত্রের সামনে থেকে উঠে চোখে পানির ঝাপটা দিয়ে আসুন। লুব্রিকেটিং আই ড্রপও অনেকেই ব্যবহার করতে পারেন।


• টেলিভিশন, মোবাইল এবং কম্পিউটার স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখায় ভালো। চশমার লেন্সে অ্যান্টি গ্লেয়ার, অ্যান্টি রিফ্লেক্টিভ কোটিং ব্যবহার করাই ভালো হবে আপনার চোখের সুরক্ষার জন্য।


• সানগ্লাস ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। কখনওই আপনি না ধুয়ে চোখে হাত দেবেন না , এতে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকে। চোখের পেশিকে আরাম দেওয়ার জন্য অন্তত সাত-আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন হয়।


কী করে বুঝবেন যে আপনার শিশুটির দেখতে সমস্যা হচ্ছে? জানতে  নিচের তথ্যগুলো পড়ুন-

• টেলিভিশনের বা কম্পিউটারের স্ক্রিনের একদম সামনে গিয়ে বসে কি না।

• বই বা মোবাইল চোখের অতি কাছে ধরছে কি না।


• পড়াশোনার ক্ষেত্রে অমনোযোগী হচ্ছে কি না।


• আঞ্জনি হলে সহজেই তা সারতে চায় না।


• বার বার চোখে পানি আসে।


• রঙের ব্যবহার, পাজল ও ডিটেলে কাজ করায় সমস্যা হয়ে থাকে।



এগুলো যখনই দেখবেন তখনই মনে করবেন যে আপনার শিশুর চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এজন্য তাকে চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে।


এ ছাড়া যেসব খাদ্য খাওয়ার মাধ্যমে চোখের এই সমস্যা দূরে রাখবেন-


চোখ ভাল রাখতে অবশ্যই সবুজ শাক-সবজি বেশি পরিমাণ খাওয়া জরুরি। ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার, গাজর, পালংশাক, ব্রকোলি, লেবুর মতো সিট্রাস ফ্রুট, বাদাম, ডিম, সামুদ্রিক মাছ ও ছোট মাছ খাওয়া চোখের পক্ষে অনেক ভাল। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ধূমপান চোখের ক্ষতি করে থাকে। এজন্য ধূমপান ছেড়ে উপরোক্ত খাবারগুলো ছোট-বড় সবাই খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং শরীরের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অঙ্গ চোখকে বাঁচিয়ে রাখুন।

Post a Comment

0 Comments